শ্রেণিকক্ষে মোবাইল চুরি, সহপাঠীদের পিটুনিতে স্কুলছাত্রের মৃত্যু!

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় শ্রেণিকক্ষে মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে শাওন খান নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত শাওন খান (১৫) ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী গ্রামের শাহিন খানের ছেলে। সে উপজেলার তেলিখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, ১ জুলাই শাওন একটি মোবাইল নিয়ে স্কুলে যায়। ওই দিন মোবাইল ফোনটি শ্রেণিকক্ষ থেকে চুরি হয়ে যায়। তবে মোবাইলটি শাওনের সহপাঠী ও স্থানীয় সাবেক এক ইউপি সদস্যের ছেলে চুরি করেছে বলে সন্দেহ করা হয়। পরে শাওন মোবাইল চুরির বিষয়টি শ্রেণি শিক্ষক আবুল হোসেনের কাছে অভিযোগ করে।

এক পর্যায়ে শিক্ষক মোবাইল চুরির অভিযোগে একই শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ নিয়ে ওই সহপাঠীর সঙ্গে শাওনের বিরোধের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে শ্রেণি শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন, মোবাইল ফোন চুরির বিষয়টি শাওন আমাকে জানালে ঘটনার তদন্ত করে এক শিক্ষার্থীর পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে বিষয়টি মিটমাট করে দেই। তবে পরে শাওনকে কে বা কারা মেরেছে তা আমার জানা নেই।

তবে নিহতের পরিবারের দাবি, ওই বিরোধের জেরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর শাহেদ তার কয়েকজন সহযোগী নিয়ে শাওনকে আটকে বেদম মারধর করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহতের চাচা সাইদুল ইসলাম বলেন, আমার ভাতিজা শাওনের সহপাঠী শাহেদ মোবাইল চুরি করে। এর প্রতিবাদ করলে সে তার সহযোগীদের নিয়ে শাওনকে মারাত্মকভাবে পিটিয়ে আহত করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভান্ডারিয়া থানার ওসি জিয়াউল আহসান বলেন, পরিবারের দাবি ওই বিরোধের জেরে মঙ্গলবার কয়েকজন শিক্ষার্থী শাওনকে আটকে রেখে মারপিট করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, শাওনের মৃতদেহ এখানো ঢাকা থেকে আনা হয়নি। সেখানে ময়নাতদন্তের পর লাশ এলাকায় নিয়ে আসা হবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *