লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে শিক্ষার্থীদের হত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলার প্রধান আসামি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু। ঘটনার পর থেকেই রয়েছেন পলাতক। তবে শনিবার (১২ অক্টোবর) তার ফেসবুক প্রোফাইলে সৌদি আরবে তোলা একটি ছবির ক্যাপশনে ‘দোয়ার দরখাস্ত’ লিখে পোস্ট করেন তিনি।
সরকার পতনের পর এটিই তার ফেসবুকে প্রথম পোস্ট করা ছবি। তার পোস্ট করা এ ছবি নিয়ে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।
ছবির কমেন্টেসে তার অনুসারীরা আলহামদুলিল্লাহসহ বিভিন্ন ধরনের পজিটিভ মন্তব্য করেছেন। তবে অধিকাংশ মন্তব্যই তার বিরুদ্ধে। কেউ কেউ তাকে লক্ষ্মীপুরে আমন্ত্রণ জানিয়ে লিখেছেন ‘শিক্ষার্থীদের ওপর কতটি গুলি করেছেন, কত মায়ের বুক খালি করেছেন, তার হিসেব দিয়ে যেতে’।
আত্মগোপনে যাওয়ার দুই মাস আট দিন পর ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যের ঘরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। এতে অনেকেই তার ফাঁসি দাবি করেছেন। কেউ কেউ কটাক্ষ করে সমালোচনাও করেছেন।
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সাদ আল আফনান ও সাব্বির হোসেন হত্যামামলার প্রধান আসামি ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি সালাহ উদ্দিন টিপু। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ও তার সহযোগীরা গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে বাসার ছাদের ওপর থেকে টানা চার ঘণ্টা গুলি চালিয়ে শতাধিক ছাত্র-জনতাকে আহত করেন।
গত ৪ আগস্ট আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে নিহত দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেনের বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে ১৪ আগস্ট থানায় হত্যা মামলা করেন।
সাব্বিরের বাবা আমির হোসেন জানান, ‘শিক্ষার্থীদের হত্যার সঙ্গে সালাহ উদ্দিন সরাসরি জড়িত। কিন্ত তিনি এখন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তার অবস্থান জানান দিচ্ছেন।’
সাব্বির ছাড়া নিহত অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাদ আল আফনান, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী কাউছার হোসেন ও একই কলেজের ওসমান গণি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৮ জন মারা যান এবং আহত হন শতাধিক।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী নুর মোহাম্মদ বলেন, সালাহ উদ্দিন চার শিক্ষার্থী খুনের আসামি হয়েও দুই মাসে ধরা পড়েননি। তার গাড়িচালক মো. রাসেল অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেছেন। তাকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মুন্নাফ বলেন, শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।
Leave a Reply