একটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। সরকার কিছু দিন আগে জাতীয় শোক এবং বিভিন্ন দিবস উদযাপন বাতিলের ঘোষণা দেয়, যা দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আন্দোলনের কারণে নতুন দিবস সংযোজনের পরিকল্পনাও রয়েছে।
সচেতন নাগরিকরা এই সিদ্ধান্তের ওপর বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন। তারা মনে করে, এই পরিবর্তনগুলি দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কিছু তরুণ সমাজকর্মী বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আলোচনা শুরু করে, যাতে জনগণকে সঠিক তথ্য ও পরামর্শ দেওয়া যায়।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার এসব দিবস চাপিয়ে দিয়েছিল। জাতীয় দিবস বলতে এমন দিবস যেটি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সবাই ধারণ করবে। যেমন বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কিছু দিবসকে বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে আরও এমন দিবস বাতিল করা হবে। পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নতুন দিবসও যুক্ত হতে পারে।’
৭ মার্চ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৭ মার্চ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ দিবস, তবে জাতীয় দিবস হওয়ার মতো না। আওয়ামী লীগ অনেক দিবসকে নষ্ট করে ফেলেছে। তারা শেখ মুজিবের মূর্তি করে পূজা শুরু করেছিল। আমরা তো ৭ মার্চ একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছি না। শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্বকে ইতিহাস থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছি না। অবশ্যই ইতিহাসে ৭ মার্চ থাকবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘অবশ্যই শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা না। আমাদের এই ভূখণ্ডের লড়াইয়ের ইতিহাসে কেবল একজন না, অনেকেরই ভূমিকা রয়েছে। আমাদের ইতিহাস কিন্তু শুধু ১৯৫২ থেকেই শুরু হয়নি। আমাদের ইতিহাসে দীর্ঘ লড়াই আছে, ব্রিটিশবিরোধী লড়াই আছে, ১৯৪৭ সালের লড়াই আছে।’
এদিকে নাহিদের এমন মন্তব্যের পর তাকে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক ও মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে তথ্য উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি লিখেছেন, ‘ভাই নাহিদ, যখন আপনাদের জন্মই হয়নি সেই সময়ের দেশ এবং নেতাদের নিয়ে কথা বলা আপনার জন্য বেমানান। আপনাকে অজ্ঞ বলতে বাধ্য করবেন না।’
সেই পোস্টের কমেন্ট বক্সে মঞ্চনাটকের নন্দিত অভিনেত্রী ও নির্দেশক নূনা আফরোজ মন্তব্য করেছেন, ‘এ দেশের মাটিতে জন্ম নিয়ে কীভাবে ৭১, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে পারে! তারা আসলে কারা?’
নূনা আফরোজ ছাড়াও অল্প সময়ে ওই পোস্টে শতাধিক মন্তব্য এসেছে। বেশির ভাগই সোহেল রানার কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তবে অনেকে নাহিদের পক্ষ নিয়েও কথা বলেছেন।
Leave a Reply