২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর মাগুরা সদর উপজেলার জগদলে তিন ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যার মামলায় অভিযুক্তদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতদের স্বজনরা। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে মাগুরা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত আব্দুর রহমান মোল্লার ছেলে বিএনপি কর্মী ওমর ফারুক অভিযোগ করেন, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ না দেওয়ায় একই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম ও তার বাহিনীর লোকজন পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে তার বাবা আব্দুর রহমান মোল্লা, চাচা কবির মোল্লা ও অপর চাচা সবুর মোল্লাকে হত্যা করেন। জগদল ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তারা।
কিন্তু চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তৎকালীন সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের ছোট ভাই আশরাফুজ্জামান হিশামের বন্ধু হওয়ায় এমপি শিখরের চাপে চেয়ারম্যান রফিকের নামে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায় সদর থানার পুলিশ। পরে এজাহার থেকে চেয়ারম্যান রফিকের নাম বাদ দিয়ে তিন দিন পর ৬৮ জনের নামে মামলা হয়। যার বাদী নিহত সবুর মোল্যার স্ত্রী ফরিদা বেগম।
অন্যদিকে রফিক চেয়ারম্যানের লোকজন নিজের লোকদের মামলা থেকে বাঁচাতে ১৫ অক্টোবর ঘটনার পরপরই একই গ্রামের ইমরান নামে এক যুবককে নিজেরা হত্যা করে নিহতের পরিবারের সপক্ষের অনেকের নামে হত্যা মামলা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, রফিকুল সংসদ সদস্য শিখরের প্রভাব খাটিয়ে পুলিশকে দিয়ে মামলার ৬৮ আসামির অনেকের নাম বাদ দেওয়া, চার্জশিট দাখিলসহ নানা কাজে বাধা দিয়ে মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করেছেন। এ মামলায় ইতিমধ্যে ৬৭ জনের নামে চার্জশিট দাখিল হয়েছে মাগুরার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। অন্যদিকে ট্রিপল মার্ডার মামলার সব আসামি এক বছরের মধ্যে জামিনে মুক্ত হয়ে বাদীপক্ষকে দীর্ঘদিন ধরে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নিহত সবুর মোল্লার পুত্র আলিফ রানা, নিহত কবির মোল্লার স্ত্রী সবুরা বেগম এবং ২০০৩ সালে একই আসামিদের দ্বারা নৃশংসভাবে খুন হওয়া জরিপ মোল্লার ছেলে মাহফুজ ইয়াসিন।
বক্তারা দ্রুত এই হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
Leave a Reply