সাকিব আল হাসানের দেশে এসে শেষ আন্তর্জাতিক টেস্ট খেলা নিয়ে নাটকীয়তা ছিল বেশ কয়েকদিন ধরে। এরপর সবুজ সংকেত পেয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার মাঝপথেই তাকে দুবাইয়ে থামতে হয়েছে। মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের শেষ টেস্ট খেলার কথা থাকলেও সেটি আর হচ্ছে না। হঠাৎ করেই দেশে আসার প্রক্রিয়া স্থগিত করার ব্যাখ্যা ইতোমধ্যে সাকিব দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও।
এবার সাকিবকে নিয়ে কথা বললেন তার ছোটবেলার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম এই জনপ্রিয় কোচ টেস্ট থেকে সাকিবের অবসর দেখতে না পারার আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন নিজের ফেসবুক পোস্টে। সালাউদ্দিন লিখেছেন, ‘দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি কখনোই এতো রাগ বা কষ্ট লাগে নাই, আজ কেন যেন লাগছে। আমরা মানুষ কি কখনও নিজেরা ভুল করি না? কেউ অনুতপ্ত হলে তাকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিৎ, কিন্তু আমরা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি মানুষ হিসেবে, দয়া-মায়া জিনিসটা আমাদের মধ্যে থেকে উঠে গেছে।’
সাকিব এবং মাশরাফি বিন মুর্তজা উভয়েই আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য হওয়ার পাশাপাশি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে নীরব থাকায় মানুষের রোষানলে পড়েছেন। দুজনের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখা গেছে সাম্প্রতিক সময়ে। এমনকি তাদের দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবিও উঠেছে। তবে সালাউদ্দিনের মতে বাংলাদেশের এই দুই তারকা খুনি হতে পারেন না, এমনকি তারা অনেককে সহায়তাও করেছেন, ‘একটা মানুষ দেশের জন্য ১৭টা বছর কিছু না কিছু করেছে, আজ ক্রিকেটবিশ্ব আমাদের একটু সম্মান করে কাদের জন্য? তারা ক্রিকেট মাঠে নামতে পারবে না, এই কান্না তো সবাই দেখবে না। রাজনীতি করছে বলে এরা খুনি? এদের সাথে মিশেছেন? এরা কত মানুষের ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে জানেন আপনি? এরা কত অসহায় মানুষের চিকিৎসা করাইছে সেটা কী জানেন?’
‘তারা স্ট্যাটাস না দেওয়ার কারণে আজ শত্রু, যখন মাশরাফি ৫টা অপারেশন করে দেশের জন্য লড়াই করছে তা কী দেখছেন? সাকিব যে আঙুলে চিড় নিয়া বোলিং করে গেছে, তামিম এক হাতে ব্যাটিং করে গেছে কাদের জন্য? দেশকে সবাই কম-বেশি ভালোবাসে, এদের ভালোবাসাটা হয়তো দেখা যায়ও না, এদের কাছ থেকে দেখেছি, এরা মানুষের উপকার ছাড়া কারও ক্ষতি করেনি, এরা খুনি না। খুব কষ্ট পাচ্ছি মাঠ থেকে এদের বিদায় দেখতে পাব না।
মানুষকে মাফ করুন, আল্লাহ আমাদের অনেক অপরাধ মাফ করে দেবেন। আমরা সবাই কম-বেশি অপরাধী, সম্মান কাউকে দিলে আপনিও সন্মানীত হবেন।’
প্রসঙ্গত, নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশে আসার পথেই সাকিবকে দুবাইয়ে থামতে হয়েছে। বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সেলক্ষ্যে দেশে আসা স্থগিত করতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বিসিবি থেকে পরামর্শ পেয়েছেন তিনি। নতুবা মিরপুর টেস্ট খেলতে কালই (বৃহস্পতিবার) দেশে আসার কথা ছিল সাকিবের। অন্যদিকে, এদিনও সাকিবকে দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে বিসিবিকে স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রজনতা। এ ছাড়া বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্স থেকে মাশরাফিকে বাদ দেওয়ার জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে সিলেটের শিক্ষার্থীরা।
Leave a Reply