বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী দেশ পরিচালনা দায়িত্ব পেলে শিক্ষা জীবন শেষে শুধু সনদ নয় শিক্ষিত যুবকদের কাজ দেয়া হবে। কোনো শিক্ষিত যুবক চাকুরির জন্য আন্দোলন করতে হবে না।
তিনি বলেন, ইসলামী রাষ্ট্রের মূল কাজই হচ্ছে জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। তাই শিক্ষিত বেকার শব্দটি বাংলাদেশ থেকে চিরতরে মুছে ফেলা হবে। আগামীতে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিবাদের সিন্ডিকেট এখনও নির্মূল হয়নি: শফিকুর রহমান
বাজার সিন্ডিকেট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তৈরি করা সিন্ডিকেট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো ভাঙতে পারেনি। ফলে জনমনে ভয় ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বাজারে বিশৃঙ্খলার সিন্ডিকেটই শুধু নয়, রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানে এবং প্রশাসনের স্তরে স্তরে চলছে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মাদের সিন্ডিকেট।’
এসব সিন্ডিকেটের ব্যাপারে জামায়াত আমির বলেন, ‘তারা ছাত্র-জনতার বিপ্লব মেনে নিতে পারছে না। তারা চাচ্ছে আবারও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করতে। কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসররা কতটা বোকা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যেখানে দলের সভানেত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, দল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে, দলের অস্তিত্বই নেই সেখানে কেন তারা দিবাস্বপ্ন দেখে তারা নিজেরাও বলতে পারবে না। জনগণ চেয়েছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ, আর সে করছে দেশত্যাগ।’
নতুন শাসনব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতা বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রত্যাশায় জীবন ও রক্ত দিয়ে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশকে নতুন করে স্বাধীন করেছে। আমরাও একটি বৈষম্যহীন সমাজ চাই। সমাজের সকল স্তর থেকে বৈষম্য দূর করতে চাই। আর এজন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই। গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্ন দল ও মত থাকতে পারে। ইসলাম প্রতিষ্ঠায় আল্লাহর দীন কায়েমে সকল ইসলামী দলকেও সকল ভেদাভেদ ভুলে এক হতে হবে।’
ইসলামী রাষ্ট্র কেমন হবে সে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কারও ওপর জোর করে ধর্ম চাপিয়ে দেয়া ইসলামী রাষ্ট্রের কাজ নয়। এটি ইসলাম বিদ্বেষীদের অপপ্রচার। ইসলামী রাষ্ট্র একটি আধুনিক ও কল্যাণ রাষ্ট্র। যেখানে মানুষ হিসেবে সকলই দেশের নাগরিক এবং সকলের অধিকার সমান। কোনো বৈষম্যের সুযোগ ইসলামী রাষ্ট্রে নাই।’
আরও পড়ুন: আন্দোলনে আহতদের পুনর্বাসনে পাশে থাকবে জামায়াত: শফিকুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল যথাক্রমে মাওলানা এটিএম মাসুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম খান মিলন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মো. সেলিম উদ্দিন ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।
Leave a Reply