অন্তর্বর্তী সরকার রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সরকার পতনের পর দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের অস্থির সময়ের মধ্যে রাজস্ব আদায়ের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক তথা জুলাই-সেপ্টেম্বরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ কম রাজস্ব আহরণ করতে পেরেছে, যেখানে আগের বছর একই প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) প্রকাশ হওয়া আরেক পরিসংখ্যানে রাজস্ব আদায়ের এ চিত্র দেখা যায়। জুলাই ও আগস্টের শুরুতে সরকার পতনের আন্দোলন, আগস্টজুড়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও ক্ষমতার পটপরিবর্তন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ভুগিয়েছে।
আমদানি, রপ্তানি ও উৎপাদনসহ অর্থনীতির সকল সূচক যখন নিম্নগামী তখন এসবের বিপরীতে রাজস্ব আহরণ কম হওয়ার শঙ্কা আগেই ছিল। এনবিআরের পরিসংখ্যান মঙ্গলবার প্রকাশে প্রকৃত চিত্র জানা গেল।
রাজস্ব খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এনবিআর চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৭০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে অঙ্কটা ছিল ৭৫ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা।
অর্থ্যাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় এবার প্রথম প্রান্তিকে ৪ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় কম করতে পেরেছে এনবিআর; যা শতাংশের হিসাবে ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ।
সরকার পতনের পর পুলিশের ওপর হামলার পর বাহিনীটির সদস্যদের নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার পর ব্যবসার পরিস্থিতি ছিল নাজুক। ব্যবসায়ীরা শুল্কায়ন করেও মাল খালাস ও গুদামে বা উৎপাদনস্থলে আনার সাহস করছিলেন না। যার প্রতিফলন দেখা গেছে আগস্ট মাসের রাজস্ব আদায়েও। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ রাজস্ব আদায় কম হয়েছে।
রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ করারও আনুষ্ঠানিক তথ্যও মিলেছে।
মঙ্গলবার প্রকাশ হওয়া আরেক পরিসংখ্যানে একই সময়ে রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তিন লাখ ৮২ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। সে হিসাবে আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে বেড়েছে ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ওই অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ হয়েছিল ৩ লাখ ৩১ হাজার ৫০২ কোটি টাকা।
Leave a Reply