free tracking

জানা গেল চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পেছনে কারা রয়েছেন!

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে নিউমার্কেট মোড়ের স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগ হওয়া মামলায় বাংলাদেশে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী গ্রেফতার হয়ে এখন কারাগারে আছেন।

গত মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী শরীফুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করেন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এরপরই সংখ্যালঘু কার্ড নিয়ে ষড়যন্ত্র খেলতে শুরু করে দেশ-বিদেশি নানা মহল। সনাতনীদের বিক্ষোভ থেকে হামলায় চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে নিহত হন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম আলিফ। সারা দেশে সৃষ্টি হয় উত্তেজনার পরিবেশ।

এখন নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে- রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর পেছনের শক্তি কী?

বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে যা দেখা যায়-

গত ৫ আগস্ট ছাত্র- জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর পর থেকে ভারত নানাভাবে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কখনো আনসার লীগ, রিকশা লীগ, বিশ্ববিদ্যালয় লীগ, গার্মেন্টস লীগ, পাহাড়ি লীগ, শাহবাগে আন্দোলন করতে কিস্তি লীগ এনেও হাজির করেছেন আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা। তবে প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে এই ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের পিছনে ভারতের ইন্ধন রয়েছে বলে দেশের বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করছেন।

অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনা ভারত পালানোর পর একের পর এক ষড়যন্ত্রের কার্ড ছুঁড়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছে ভারত ও আওয়ামী লীগের নেতারা। সম্প্রতি সেই ধারাবাহিকতায় দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর জন্য ইসকনকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের পরপরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার অভিযোগে তাদের ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ কার্ডও ব্যর্থ হয়।

ইসকন থেকে বহিষ্কৃত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জন্য ভারতের বিজেপি নেতা শুভেন্দু বাংলাদেশকে হুমকি ছুঁড়ে দিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অবরোধ করবে। এছাড়াও চিন্ময়ের গ্রেফতারের প্রতিবাদে নিন্দা জানানোর পাশাপাশি কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ কার হবে বলে কর্মসূচি দেন এই বিজেপি নেতা। তার এই বক্তবব্যের কারণে খোদ ভারতে বেশ সমালোচিত হচ্ছেন শুভেন্দু।

দেশটির বিশ্লেষকদের বক্তব্য, শুভেন্দু অধিকারীরা পশ্চিমবঙ্গেই পাত্তা পায় না, অথচ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তারা কি করে হুংকার দেয়!

এদিকে বাংলাদেশের অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য ইসকনকে যে ভারত মাঠে নামিয়েছে তার প্রমাণ শুভেন্দু অধিকারীর হুমকিই শুধু নয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিও এর প্রমাণ দেয়।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দাবি করা হয় বাংলাদেশে ‘উগ্রপন্থীদের’ দ্বারা হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে চিন্ময়ের বিরুদ্ধে এতো এতো প্রমাণ থাকার পরও ভারতের ইচ্ছাকৃত ভুল বিবৃতি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতীয়দের হস্তক্ষেপ এখন ভিন্ন কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

বিশ্লেষকদের অভিযোগ, পর্দার আড়ালে থেকে হিন্দুত্ববাদী ভারত ও আওয়ামী লীগ কলকাঠি নাড়ছে তা এখন জাতির কাছে স্পষ্ট। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের নানাবিধ হস্তক্ষেপ এখন সে কথার প্রমাণই দিচ্ছে।

অন্যদিকে চিন্ময়ের বিরুদ্ধে চট্রগ্রামে জমি দখল, রাষ্ট্রদ্রোহীতা, শিশু নিপিড়নসহ আরো নানা অপকর্মের অভিযোগ আছে। আরো আছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা, সর্বশেষ চট্টগ্রামে স্বাধীনতা স্তম্ভের উপর হিন্দুত্ববাদীদের গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকার অবমাননার মতো গুরতর অভিযোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *