ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা আজমির শরিফের নিচে মন্দির থাকার দাবি তুলে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছে। রাজস্থানের আজমিরে অবস্থিত সুফি সাধক মইনউদ্দিন চিশতির দরগাটি নিয়ে এই বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্থানীয় আদালত পিটিশনটি গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ১৯১১ সালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক হর্বিলাস সার্দারের লেখা একটি বইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে পিটিশনটি দায়ের করা হয়েছে। ওই বইয়ে দাবি করা হয়েছিল, আজমির শরিফের দরগাটি হিন্দু শিব মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর নির্মিত এবং সেখানে একটি জৈন মন্দিরও রয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের সামভাল এলাকায় মসজিদের নিচে মন্দির থাকার দাবি নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার মধ্যেই আজমির শরিফ নিয়ে বিতর্কিত দাবি সামনে এলো। সামভালের ঘটনায় সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছিলেন।
আজমির আদালতের দেওয়ানি বিচারক মনমোহন চান্দেল দরগাহ কমিটি, ভারতের সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় এবং ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থার নয়াদিল্লি অফিসকে নোটিশ পাঠিয়ে ২০ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। পিটিশনকারীদের পক্ষের আইনজীবী যোগেশ শিরোজা দাবি করেছেন, দরগার জায়গায় পূজা করার অধিকার হিন্দুদের ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
হিন্দু সেনার প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত বলেন, আমাদের দাবি, আজমির শরিফকে সংকট মোচন মহাদেব মন্দির হিসেবে ঘোষণা করা হোক। যদি দরগার কোনো নিবন্ধন থেকে থাকে, সেটিও বাতিল করা হোক।
তবে দরগাহ কমিটি এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে, এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আঞ্জুমান সৈয়দ জাদগানের সেক্রেটারি সৈয়দ সারওয়ার চিশতী জানান, এই দরগায় বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ আসেন। আফগানিস্তান থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত লোকজন এখানে একত্র হন। এই ধরনের পিটিশন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়াবে।
দরগাহ কমিটির মতে, কাশী ও মথুরার মসজিদগুলো নিয়েও এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যা ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
Leave a Reply