free tracking

ভারত নয় টার্গেট এবার বাংলাদেশ!

ট্রাম্পের যে খেলায় এগিয়ে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে ভারত। আনপ্রেডিক্টেবল ট্রাম্প যেন বিশ্ব রাজনীতির এক নিত্যনতুন চমক। সবার অনুমান ভুল প্রমাণ করে বিশ্বস্ত বন্ধু মোদীকে শপথের দাওয়াত তো দেননি, বরং ভারতীয়দের বিরুদ্ধে দাগাচ্ছেন একের পর এক তোপ।

আবার অন্যদিকে ভারতের মোদীকে দূরে ঠেলে দিয়ে কাছে টেনে নিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনূসকে। এটা কি ট্রাম্পের শুধুই খেয়ালিপনা? নাকি রয়েছে এ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে কোনো নতুন ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ? যে সমীকরণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশকে কাছে টেনে নিয়ে ভারতকে দূরে ঠেলে দিতে চায়, নাকি ব্যবসায়ী ট্রাম্প তাঁর ব্যবসার প্রয়োজনে দরকার বাংলাদেশকে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. এম শহীদুজ্জামান বলেন, আমেরিকানদের স্বার্থ হচ্ছে পুঁজিবাদকে শক্তিশালী করা, কমিউনিস্ট বা সোশ্যালিজম কে প্রত্যাখ্যান করা। ইউনূস সাহেব হচ্ছে ক্যাপিটালিজমের সুন্দর চেহারা প্রদর্শন করার উৎকৃষ্ট উপাদান। ট্রাম্প একজন কট্টর পুঁজিবাদী। ট্রাম্প নিজেকে ওয়েলফেয়ার স্টেটের ধারণায় প্রজেক্ট করতে চায় এবং সে ইউনূসের মুখ থেকে শুনতে চাইবে যে, সে একজন দায়িত্বশীল মানবতাবাদী প্রেসিডেন্ট। ইউনূস সাহেব ওই সুযোগকে বাদ দেবে না। কারণ ইউনূস সাহেবের আমেরিকায় তার প্রচুর ইনভেস্টমেন্ট রয়েছে। ইউনূস ফাউন্ডেশন রয়েছে এবং তার স্বার্থ হবে ঠিক রিপাবলিকান পার্টি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প কেও ব্যবহার করা তার নিজের গ্রামীণ প্রজেক্টের স্বার্থে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষক অধ্যাপক ডক্টর এম সাইদুজ্জামান পূর্ব অনুমান যেন প্রতিফলিত হচ্ছে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসায়িক চুক্তিতে। ট্রাম্প ক্ষমতায় বসতে না বসতেই বাংলাদেশ হচ্ছে প্রথম দেশ যে ব্যবসায়িক চুক্তি স্বাক্ষর করে। বছরে পঞ্চাশ লাখ টন এলএনজি কিনতে মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয় বাংলাদেশ সরকারের। এর ফলে বাংলাদেশের গ্যাস সংকট দূর হবে। আর জ্বালানি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ভারতসহ অন্যদের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। এ যেন ট্রাম্পের পপুলার ইলেকশন প্রমিস। ডুয়েল বেবি ড্রিল এর সাথে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া। ট্রাম্পের এই মেয়াদে মোদীকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল ডক্টর ইউনূস।

ট্রাম্পের স্লোগান যেমন আমেরিকা ফার্স্ট তেমন অংশীদারিত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ এখন ফাস্ট। আর অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার পর ঘোষণা দিয়েছেন, ভারত যদি মার্কিন পণ্যের ওপর একশো শতাংশ শুল্ক চাপায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সে পরিমাণ শুল্ক চাপাবে। এটা যদি হয়, তাহলে ভারতের অর্থনীতি চাপে পড়বে।

এমনই বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় ভারতের রিজার্ভে চাপ পড়েছে। রুপির দর পতন সর্বোচ্চ। এখন যদি বাড়তি করের বোঝা ভারতকে নিতে হয়, তাহলে রপ্তানি আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাবে। শুধু এটা নয়, ট্রাম্পের করা অভিবাসন নীতির কোপ পড়বে ভারতীয়দের ঘাড়ে। ২০২৪ সালে পিউ রিসার্চের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আমেরিকায় আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্ট বা কাগজপত্রবিহীন বিদেশি অভিবাসীদের মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা সাত লাখ ২৫ হাজার।

ভারতীয় জনগোষ্ঠী হল এখানে তৃতীয় বৃহত্তম। মেক্সিকো আর এল সালভাদরের পরে ট্রাম্পের আমলে এদেরকে ভারতে পাঠিয়ে দিলে চাপে পড়তে হবে ভারতকে। তাই এখনও পর্যন্ত এটা বলা যায়, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে আছে বাংলাদেশ ও নোবেল জয়ী ডক্টর ইউনূস। আর যেখানে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে সেখানে নির্দ্বিধায় পিছিয়ে গেছে ভারত।

ভিডিও: https://youtu.be/kdmvZLyUVXM?si=HBrID3a57hqU_dxd

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *