ছাত্র বিক্ষোভ ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তখন থেকে বোন রেহানাসহ দেশটিতেই অবস্থান করছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ভারতে বসে দেশ সম্পর্কে বেশকিছু মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তার সাম্প্রতিক এসব রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতিকে অবন্ধুসুলভ আচরণ বলে বর্ণনা করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেছেন, (শেখ হাসিনা সরকারের আমলে হওয়া) নৃশংসতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ন্যায়বিচারের জন্যই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।’’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘‘হ্যাঁ, তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে, তা না হলে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে না। শেখ হাসিনা যে ধরনের নৃশংসতা করেছেন, তাকে এখানে সবার সামনে বিচার করতে হবে।’’
শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করায় কেউই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না মন্তব্য করে ড. ইউনূস বলেন, “বিচার করার জন্য আমরা তাকে ফেরত আনতে চাই। তিনি ভারতে রয়েছেন এবং সেখান থেকেই মাঝে মাঝে কথা বলছেন। এটা সমস্যা তৈরি করছে। যদি তিনি চুপ থাকতেন, তাহলে আমরা ভুলে যেতাম। মানুষও এটা ভুলে যেত, যদি তিনি নিজের জগতেই থাকতেন। কিন্তু তিনি ভারতে বসে কথা বলছেন এবং দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন, কেউই এটা পছন্দ করছে না।’’
এ সময় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, সামনের দিনে ভারতকে একটি ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেটি হলো বাংলাদেশের সবাই ইসলামপন্থী, বিএনপি ইসলামপন্থী। বাকি সবাইও ইসলামপন্থী এবং (তারা) এই দেশটিকে আফগানিস্তানে পরিণত করবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাতেই নিরাপদ- এমন সব ধারণা থেকে ভারতকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশও অন্য প্রতিবেশীর মতো একটি প্রতিবেশী দেশ।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ ভারত ও বাংলাদেশের বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের উন্নতির জন্য উভয় দেশের একসাথে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
সূত্র: এনডিটিভি
Leave a Reply