আগেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন উরুগুয়ের কিংবদন্তি ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে শুক্রবারের ম্যাচটাই হবে তার ক্যারিয়ারের শেষ। তাই তো রাজধানী মন্টেভিডিওর এস্তাদিও সেন্টেরাওিতে কিংদন্তি এ ফুটবলারের বিদায়ী ম্যাচ দেখতে হাজির হয়েছিল প্রায় ৪৮ হাজার দর্শক।
কিন্তু বিদায় বেলায় দর্শকদের মন ভরাতে পারেননি উরুগুয়ের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। কোনো গোল করতে পারেননি, করাতেও পারেননি। এতে করে গোলশূন্য ড্র হয়েছে ম্যচটি। সেই সঙ্গে শেষ হলো উরুগুয়ের হয়ে সুয়ারেজের ১৭ বছরের ক্যারিয়ার। অবসরের আগে অবশ্য দেশটির হয়ে সর্বোচ্চ গোল স্কোরার হিসেবেই বুটজোড়া তুলে রাখছেন। ১৪৩ ম্যাচে তার গোল ৬৯টি। কিন্তু সাবেক বার্সেলোনা ও লিভারপুল তারকা এদিন আর গোল সংখ্যা ৭০ এ নিয়ে যেতে পারেননি। উরুগুয়ের ইতিহাসে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছেন।
এদিন ম্যাচ ছাড়িয়ে সবার দৃষ্টি ছিল লুইস সুয়ারেজের দিকেই। তাকে বিদায় দিতে উপস্থিত ছিলেন দেশটির কিংবদন্তি কোচ অস্কার তাবারেজও। তারকা এই ফুটবলার পুরো পরিবারকে সঙ্গে করে বিদায়ী ম্যাচে মাঠে উপস্থিত ছিলেন। অশ্রুসিক্ত হতে দেখা যায় তাদেরও। বিদায়ের মুহূর্তে বারবার চোখের পানিতে ভেসেছেন সুয়ারেজও।
সুয়ারেজের এই বিদায়ী অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বড় চমক ছিল বন্ধু লিওনেল মেসির আবেগপ্রবণ বার্তা। রেকর্ড করা ভিডিওতে স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় বন্ধু সুয়ারেজের উদ্দেশে মেসি বলেন, বিশেষ এই দিনে আমি তোমার জন্য এই ভিডিও রেকর্ড করেছি। এটা তোমার, তোমার পরিবারের, উরুগুয়ের এবং সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের জন্য উল্লেখযোগ্য এবং বিশেষ একটি দিন। তুমি জাতীয় দলকে এবং দেশকে যা দিয়েছ, সে জন্যও এটি উল্লেখযোগ্য।
বিদায়ী বার্তায় মেসি আরও বলেন, আমি জানি এই সিদ্ধান্ত নেয়া কতটা কঠিন। কারণ, উরুগুয়ের জন্য খেলাটা তোমার কাছে কী অর্থ বহন করে, সেটা আমি জানি। আমি আশা করব, যে শ্রদ্ধার্ঘ্য তোমাকে দেয়া হচ্ছে, তা তুমি উপভোগ করবে। আমি যা বললাম, তুমি তার চেয়েও বেশি যোগ্য। কারণ, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তুমি সবকিছু উজাড় করে দিয়েছ। আজ যারা সেখানে উপস্থিত আছে, তুমি তাদের জন্য বিশাল এক উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছ।
বিদায়ী বার্তায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুয়ারেজ বলেন, উরুগুয়ে যেকোনো খেলোয়াড়, কোচ, পরিচালক কিংবা যে কারও চেয়ে বড়। আগামীকাল থেকে আমি শুধুই আরেকজন ভক্ত। যারা এরপর খেলতে আসবে, সবার জন্য শুভকামনা থাকবে। নিশ্চিতভাবে তারাও আমাদের মতো দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। উরুগুয়ে দীর্ঘজীবী হোক এবং আমি সব সময় উরুগুয়ের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।
প্রসঙ্গত, বিদায়ী ম্যাচটিতে বেশ দাপটের সঙ্গেই খেলেছে উরুগুয়ে। ৬৫ শতাংশ বলের দখল রেখে প্রতিপক্ষকে বেশ চাপে রাখলেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি। তবে সুযোগ তৈরিতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি দলটি। ১১টি শট নিলেও মাত্র ১টি শট রাখতে পারে লক্ষ্যে। অন্যদিকে প্যারাগুয়েও ম্যাচের ধারা বদলানোর জন্য বেশি কিছু করতে পারেনি। ফলে দুই দলকেই ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
Leave a Reply