বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমরা যেমন ভারতের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করি, তেমনি ভারতেরও উচিত আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা।
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, কোনো দল বা ব্যক্তির প্রতি যদি আপনাদের যোগাযোগ থাকে, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ এটা ভালোভাবে মেনে নেবে না। বাংলাদেশের জনগণ যেমন দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন সহ্য করতে পারে, তেমনি বিদেশি হানাদারদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ এবং তেজ দেখাতে জানে। বাংলাদেশ যে একটি বীরের জাতি, এটা আপনাদের মাথার মধ্যে কিন্তু রাখতে হবে।
শনিবার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শেরেবাংলা নগরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার ১৬/১৭ বছরের স্বৈরশাসনে কেউ একটু শব্দ করতে পারত না। বাংলাদেশের মানুষ কী চাইতো আর কী চাইত না, শেখ হাসিনার তার ধার ধরতো না। মানুষের পিঠ দেয়ালে এমনভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন যে, মানুষ তার জীবনের মায়া না করে তার পতনের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নেমেছিল।
তিনি বলেন, যারা নিজ দেশের জনগণের ওপর অত্যাচার করে, হত্যা করে, আয়নাঘর বানিয়ে বছরের পর বছর আটকে রাখে, তারা দেশ পরিচালনা করবে কিভাবে? কিছুদিন পুলিশ দিয়ে হত্যা-গুম করে দেশ পরিচালনা করেছে। কিন্তু মানুষ জীবনের মায়া ত্যাগ করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে তাদের পতন ঘটিয়েছে। যেমনিভাবে ব্রিটিশদের তাড়িয়েছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের তাড়িয়েছে, ঠিক তেমনি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।
বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার দেশের বিভিন্ন কমান্ডোদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন- এটা উদ্বেগজনক। এটা উস্কানি কিনা জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আপনারা (ভারত) কী নববধূকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য, তার জমিদারি পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছেন? তাহলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এভাবে কথা বলছে কেন?
ভারতের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ দেশ থেকে এক দানবকে তাড়িয়ে মুক্ত বাতাসে চলাফেরা করছে। আমি যে গ্রেফতার হতে পারি, গুম হতে পারি- এ শঙ্কা আর নাই। এখন মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছে, শান্তিতে ঘুমাতে পারছে। এটা কী আপনারা চাচ্ছেন না? বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক, মানুষ শান্তিতে থাকুক- এটা কী ভারতের নীতি নির্ধারকরা পছন্দ করে না?
নাকি এসব মেনে নিতে পারছে না? শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশে নাই- এই কষ্ট কী ভারতের নীতি নির্ধারকরা মেনে নিতে পারছে না? আমরা যেমন ভারতের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করি, ভারতেরও উচিত আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা।
বিএনপির সহ-নার্সেস বিষয়ক সম্পাদক ও ন্যাব সভাপতি জাহানারা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, সদস্য মো. মাহবুবুল ইসলাম, ইঞ্জি. ইকবালুর রহমান রোকন, ন্যাব সাধারণ সম্পাদক মো. সুজন মিয়া, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আরিফুর রহমান তুষার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহ-সভাপতি ডা. আউয়াল, ন্যাব নেতা মাহমুদ হোসেন তমাল, শাহীনুর রহমান, মর্জিনা আক্তার, মমতাজ বেগম, বিএম রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।
Leave a Reply