রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে যা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ!

এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে লিখেন, ‘রাজনৈতিক দলগঠন আমাদের গণঅভ্যুত্থানের অভিমুখ না। এই মূহুর্তে প্রয়োজন অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, নতুন করে দেশগঠন-সংস্কার ও অভ্যুত্থানের স্পিরিট ও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা। ছাত্র-জনতা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করবে।’

ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বাতিল করা হবে জানিয়ে নাহিদ লিখেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আমাদের এক দফার অংশ ছিল। সেজন্য বিস্তর কাজ ও রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রয়োজন। জনগণের সঙ্গে আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা প্রণয়ন করতে চাই।’

‘কিন্তু এই মূহুর্তে রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নাই। ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষায় সামাজিক-রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এবং সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্র পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করবে’ যোগ করেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনিসহ উপদেষ্টা পরিষদে এখন ২১ জন সদস্য রয়েছেন।

উপদেষ্টাদের মধ্যে নাহিদকে প্রথমে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রাণয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর গতকাল শুক্রবার (১৬ আগস্ট) উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পুনঃবণ্টন করে নাহিদ ইসলামকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির পাশাপাশি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে সালেহ উদ্দিন আহমেদকে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনকে সরিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ড. আসিফ নজরুলকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

আদিলুর রহমান খান শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দেখবেন। রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে থাকবেন।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

আর ফারুকী আজম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) শপথ নেয়া নতুন চার উপদেষ্টাদের মধ্যে আলী ইমাম মজুমদারকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি কৃষি মন্ত্রণালয়ও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, খাদ্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব রয়েছে। অন্য উপদেষ্টাদের মধ্যে হাসান আরিফ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়; মো. তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র; শারমিন এস মুরশিদ সমাজকল্যাণ; সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক; বিধান রঞ্জন রায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা; আ ফ ম খালিদ হোসেন ধর্ম; ফরিদা আখতার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ; নুরজাহান বেগম স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *