সেভেন সিস্টার্সের ৬০ কি.মি. গভীরে ঢুকে ক্যাম্প করল চীনের সেনাবাহিনী, যা জানালো ভারত!

কৌশলগতভাবে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সাত রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্সের অন্তর্ভুক্ত অরুণাচল প্রদেশের প্রায় ৬০ কিলোমিটার গভীরে ঢুকে পড়েছে চীনের সশস্ত্র বাহিনী। ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে অরুণাচল প্রদেশের আনজাও জেলার কাপাপু এলাকায় ক্যাম্পও করেছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএএল)। অরুণাচলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজফাই সরেজমিন ঘুরে তৈরি করা এক প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য জানিয়েছে।

দ্য ডনলিটপোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাপাপু এলাকায় গভীর বনে আগুন ধরানো, পাথরের গায়ে রং ব্যবহার করে লেখা চীনের নাম এবং চীনা খাদ্যসামগ্রীর ছবি দেখে বোঝা যায়, সেখানে প্রায় এক সপ্তাহ আগে চীনের সেনারা ঢুকেছিলেন।

ছবিতে দেখা যায়, পাথরের গায়ে ইংরেজিতে ২০২৪ সাল লেখা রয়েছে। ভারতীয় ভূখণ্ডে নিজেদের মালিকানা দাবি করার অংশ হিসেবে অনুপ্রবেশের পর চীনা সেনাবাহিনী এসব কৌশল ব্যবহার করে বলে জানা যায়।

নিউজফাইয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুই দেশকে বিভক্তকারী ম্যাকমোহন লাইনের হাদিগ্রা পাসের কাছের কাপাপুতে ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) একটি ক্যাম্পের অবস্থান রয়েছে। আর আনজাও জেলার নিকটতম প্রশাসনিক এলাকা চাগলাগাম ম্যাকমোহন লাইন থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়া চাগলাগাম থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে পার্বত্য এলাকায় গ্লাইতাকরু পাসের অবস্থান।

যা বলল ভারত : অরুণাচল রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী দাসাংলু পুল জানিয়েছেন, স্থানীয়দের মতে, চীনা সেনারা কাপাপু জেলায় প্রবেশ করেছিল এবং চলে যাওয়ার আগে কয়েকদিন সেখানে অবস্থান করেছিল।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের একজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা অনুপ্রবেশের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, যে এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটে থাকে।

ওই সেনা কর্মকর্তা আরও দাবি করেন, যে ‘পিএলএ সেনারা ভারতীয় ভূখণ্ডের ৬০ কিলোমিটার ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছে এটি মিথ্যা। কারণ এইখানকার সীমানা সঠিকভাবে চিহ্নিত না হওয়ায় এটি ঘটে থাকে।দুই পক্ষের সেনারা টহল দেয়ার সময় একে অন্যের ভূখণ্ডে না বুঝেই ঢুকে পড়ে। তারা কখন যে শত্রুর ভূখণ্ডে রয়েছে তা বুঝতে পারে না।,’

তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি ‘বাফার জোনে’ ঘটে থাকে। এসময় জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এর আগে, ২০২২ সালের আগস্টে, পিএলএ সেনারা হাদিগ্রা হ্রদের কাছে নিজেদের অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম তদারকি করে বলে জানা গেছে। সেখানে তিনটি খননকারী যন্ত্র দিয়ে খনন কাজ পরিচালনা করতে দেখা যায় চীনা বাহিনীকে।

একই বছরের ১১ আগস্ট চাগলাগাম থেকে ৩০ কিলোমিটারেরও কম দূরের ওই এলাকার নির্মাণ কাজ পর্যবেক্ষণ করে চীনের সামরিক বাহিনীর এলআরপি টহল দল।

তারও আগে ২০২১ সালে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় ভূখণ্ডের ভেতরে কমপক্ষে ৬০টি ভবনের দ্বিতীয় ক্লাস্টারের নির্মাণ কাজ পরিচালনা করছে চীনা সামরিক বাহিনী।

ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত লাগোয়া বিশাল অংশের মালিকানা দাবি করে প্রতিবেশী চীন। চীনের সঙ্গে ভারতের মোট ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে কেবল বিরোধপূর্ণ অরুণাচলের সঙ্গে চীনের সীমান্ত রয়েছে এক হাজার ১২৬ কিলোমিটার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *